মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ধনি এবং ক্ষমতাধর ১০ জন ব্যাক্তি ( পর্ব -১)
মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান শেখদের সম্পদ সম্পর্কে ধারনা নেওয়াটা প্রায় অসম্ভব একটা বিষয়। এটার প্রধান কারন হচ্ছে তাদের সম্পদের কোন ট্যাক্স বা সামগ্রিক হিসাব হয় না। একেবারেই আলাদা সেক্টরে তাদের বিশাল ইনভেস্টমেন্ট রয়েছে। যেগুলো শুনলে অবাক হয়ে যেতে হয়। আমি এখানে চেস্টা করেছি টাকা এবং ক্ষমতার হিসাবে একটা লিস্ট করার জন্য।মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান শেখদের সম্পদ সম্পর্কে ধারনা নেওয়াটা প্রায় অসম্ভব একটা বিষয়। এটার প্রধান কারন হচ্ছে তাদের সম্পদের কোন ট্যাক্স বা সামগ্রিক হিসাব হয় না। একেবারেই আলাদা সেক্টরে তাদের বিশাল ইনভেস্টমেন্ট রয়েছে। যেগুলো শুনলে অবাক হয়ে যেতে হয়। আমি এখানে চেস্টা করেছি টাকা এবং ক্ষমতার হিসাবে একটা লিস্ট করার জন্য।
১০) Abdullah bin Musa'ed bin Abdulaziz Al Saud

এই ভদ্রলোক হচ্ছেন সৌদিআরবের মৃত প্রিন্স Musa'id bin Abdulaziz Al Saud এর পুত্র। তার টোটাল সম্পদের পরিমান হচ্ছে ১৮ বিলিয়ন বা এক লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার কোটি টাকার উপরে। তিনি মুলত ধনাড্য ব্যবসায়ি হিসাবে পরিচিত। তিনি সৌদি আরবের সমগ্র কাগজের ব্যাবসা কন্ট্রোল করেন। এছারা তিনি বেশ কয়েকটি ফুটবল ক্লাবের মালিক। কিছুদিন আগে তিনি ইংলিশ ক্লাব Sheffield United এর অর্ধেক মালিকানা কিনে নেন। তবে সামান্য কাগজের ব্যবসায় এত টাকা আসার কথা না। ধারনা করা হয় তিনি সমগ্র মধ্য প্রাচ্যে সন্ত্রাসিদের জন্য অস্ত্র এবং অন্যান্য জিনিষের বিক্রেতা। এছারা আমেরিকায় বেশ কয়েকটি অস্ত্রের কোম্পানিতে তার বিশাল সব ইনভেস্টমেন্ট রয়েছে। এই সব অস্ত্র বিক্রয় করার জন্য তিনি খুব উৎসাহের সাথে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ জিয়িয়ে রাখছেন।
উনার সম্পর্কে যে কোন অপপ্রচারনা সৌদি গোয়েন্দা সংস্থা, মোসাদ, সিআইএ সহ আরো কিছু গোয়েন্দা সংস্থা সফলাতার সাথে রুখে দেয়। তাই খোজ নিতে গেলে আপনাকে হতাশ হতে হবে।
০৯) Al-Waleed bin Talal

ওরে আল্লাহ। উনার ব্যাপারে কথা বলতে গেলে আগে ওজু কইরা বসতে হবে। তিনি বর্তমানে মধ্যপ্রচ্যে সবচেেয়ে ধনি ব্যাবসায়িদের মধ্যে অন্যতম। এবং তিনি বর্তমান বিশ্বের প্রথম সারির ২০ জন ধনি ব্যবসায়িদের মধ্যে অন্যতম। তিনি বর্তমান সৌদি রাজা আব্দুল্লাহর আপন ভাই তালাল বিন আব্দুল আজিজ এর ছেলে। উনার ইনভেস্টমেন্ট আছে AOL, Apple Inc., MCI Inc., Motorola, Fox News সহ আরো অনেক আমেরিকান এবং ইহুদি মালিকানাধিন কোম্পানিতে। এছারা উনি সিটি ব্যাংকের বিশাল একটা শেয়ারের মালিক। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় কন্সট্রাকশন কোম্পানি কিংডম হোল্ডিং এর একক মালিক। এছারাও নামে বেনামে বেশ কিছু ইহুদি মালিকানাধিন কোম্পানিতে উনার ইনভেস্টমেন্ট আছে। সবাই জোরসে সুবাহানআল্লাহ বলেন। এছারাও আমেরিকার হোটেল কোম্পানি ফোর সিজনস এবং প্লাজা হোটেলও উনার ইনভেস্টমেন্ট আছে। তিনি একই সাথে ইংল্যান্ডের স্যাভয় হোটেল ম্যনেজম্যান্টএর একক মালিক। স্যাভয় হোটেল সম্পর্কে যাদের জ্ঞান আছে তারাই ভাল বলতে পারবে এইটা কি জিনিষ। উনার টোটাল সম্পদের পরিমান বর্তমানে ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপরে আছে। তবে সেটা আমেরিকান হিসাবে। সৌদি হিসাবে সেটা অজানা কারন সেখানে উনি কোন ট্যাক্স পে করেন না। উনার একটা এয়ারবাস এ৩৮০ বিমান আছে যেটার ইন্টেরিয়র পুরাটা উনা স্বর্ন দিয়া সাজাইছেন। এছারা বর্তমানে বিশ্বের সেরা একটা ইয়ট আছে উনার। দামি কালেকশনের দিক দিয়ে উনি এই মুহুর্তে বিশ্বে শির্ষ। সবাই আবার বলেন মারহাবা। তবে উনি খুব দানশীল ব্যাক্তি। উনি আমেরিকার পর্ন হাউস বলে খ্যাত বেশ কিছু ক্লাব, এছারা কিছু অরফানেরজ, প্যারিসের কিছু দাতব্য প্রতিষ্ঠান, এবং ইংল্যান্ডের কিছু প্রতিষ্ঠানে দান করেন। উনার দানের হাত এতই লম্বা যে উনি আমেরিকার ইহুদি সমাজের মধ্যে বিশাল দানবীর হিসাবে পরিচিত। সবাই আবার বলেন সুবহানআল্লাহ।
উনার পুরান একটা ইয়াট ছিল যেটা তিনি এতদিন চালাইছেন। তবে গত বছর উনার নতুন ইয়াটটা ডেলিভারি আসছে। সেটার নাম হইতাছে আজ্জাম।
উনার পুরান একটা ইয়াট ছিল যেটা তিনি এতদিন চালাইছেন। তবে গত বছর উনার নতুন ইয়াটটা ডেলিভারি আসছে। সেটার নাম হইতাছে আজ্জাম।

৫৯০ ফিট লম্বা এই বিলাশ বহুল জাহাজটা এই মুহুর্তে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং ব্যায় বহুল জাহাজ। এটার সর্বসাকুল্যে দাম পরছে মাত্র ৪০০ মিলিয়ন ডলার। ভিতরকার ছবি এখনো পাওয়া যায় নাই তবে ধারনা করা হয় হাফ টনের মত স্বর্ন ইউজ করা হইছে এটার ইন্টেরিয়র কাজের জন্য।


উনার একটা এয়ারবাস৩৮০ আছে। প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার খরচ কইরা তিনি এয়ারবাস কোম্পানির কাছথেকে নিজের মত কইরা ডিজাইন কইরা কিনে নিছে বিমানটা। এই বিমানটা মুলত বর্তমানে পৃথিবীর সবচেলে বড় যাত্রিবাহি বিমান। উনি এখানে এত স্বর্ন ব্যাবহার করেছেন যে উনার বসার সোফা হইতে শুরু করে বিছানার চাদর টা পর্যন্ত স্বর্নের সুতা দিয়অ সেলাই করা হইছে।

এইটা উনার বিবি। আর দেইখেন না। গুনাহ হবে। লিস্টের নিচে নামেন।
০৮) Hamad ibn Isa Al Khalifa

০৮) Hamad ibn Isa Al Khalifa

তিনি বর্তমানের বাহরাইনের খলিফা। এনাদের শাষন ব্যবস্থা আবার একটু ভিন্ন ধরনের। আমেরিকা যেমন ইসরাইলের পা চাটে, আবার সৌদি যেমন আমেরিকানদের পা চাটে এরা তৃতীয় পক্ষ হইয়া সৌদি রাজাদের পাছা চাটে। একচুয়ালি তার বাপ ইসা আল খলিফারে ক্ষমতায় বসাইছিল আল সৌদ বাহরাইনকে কন্ট্রোল করার জন্য। এখন তারে ক্ষমতায় বসাইয়া রাখছে আল সৌদ। ভদ্রলোক প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের মালিক। অন্যান্যদের তুলনায় তিনি একটু কম ধনি হলেও তার দেশের বর্তমান অবস্থায় তিনি বলতে গেলে বিশাল ধনি। কিন্তু খুবই মজার বিষয় হচ্ছে তার এই সম্পদ এর বেশির ভাগই মুলত পশ্চিমা বিভিন্ন কোম্পানিতে ইনভেস্ট হিসাবে আছে। এর মধ্যে কিছু কোম্পানির সাথে ইহুদি পার্টনারশিপ রয়েছে। ওনার সাথে ইংল্যান্ডের রাজ পরিবারের সাথে ব্যাপক খাতির রয়েছে। রানি পাদ মারার জন্য পার্টি দিলেও সেখানে আমাদের এই রাজা উপস্থিত হয়ে যান।

উপরের ছবিটা উনার একটি ব্যাক্তিগত ইয়ট এর। এর ভিতরে যে কি আছে সেইটা আপনার ভাল কইরা বাইরের দিকে তাকাইলেই বুঝবেন। এখানে উনি উনার বিবিদেরকে নিয়া আসেন আবার মাঝে মাঝে বিবি ছারাই আসেন। তবে তখন বিবির স্থানে কারা থাকেন সেটা জানা যায় নাই।
০৭) Qaboos bin Said al Said

০৭) Qaboos bin Said al Said

ইনি বর্তমানে ওমানের রাজা হিসাবে ওমান শাষন করতেছেন। ভদ্রলোক দেখতে কিছুটা ছোটখাট হইলোও তার টেকের জোর আছে। তিনি মনে হয় বর্তমানে সকল রাজাদের মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন বংশের। তিনি ওমানে আলবুসাইদ রাজবংশের ১৪ তম বংশধর। তবে পুরাতন হইলে কি হবে অন্যান্য রাজাদের থেকে তিনিও কম যান না। উনার সর্বোমোট সম্পদের পরিমান এই মুহুর্তে ৬ বিলিয়ন ডলারের উপরে। তিনি ওমানের কয়েকটি তেলের খনির একক মালিক। তার সম্পদগুলা অর্ধেক আছে তেল বেইজড আর বাকি গুলো তিনি খুব সন্তর্পনে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো তে প্রচুর ইনভেস্ট মেন্ট করে রেখেছেন। তবে বেশিরভাগই তেল বেইজড কোম্পানি। এই ভদ্রোলোক ইচ্ছা করলেই ইসরাইল-আমেরিকা সহ বেশ কিছু দেশের ইকোনোমিতে একটা ধাক্কা দিতে পারতেন।

উপরের ইয়টটা বর্তমানে পৃথিবীর চতুর্থ সর্ববৃহৎ ইয়টের গৌরব অর্জন করেছে। এটার মধ্যে একটা হেলিকপ্টার, একটা বিশাল সুইমিংপুল, একটা অর্কেস্ট্রা ব্যান্ড, পুরা ফাইব স্টার মানের বিলাশ বহুল সুইট এবং সুলতানের জন্য আলাদা কিছু ব্যাবস্থা রয়েছে। এখানে উনি উনার বিবি ছারাও মাঝে মধ্যে অন্যদেরকেও নিয়ে আসেন। তবে দুস্টু লোকে বলে উনি নাকি অল্প বয়সি সুন্দর ছেলেদের বেশি পছন্দ করেন। তবে দুস্টু লোকেদের কথায় কান দিতে নাই।

উপরের ছবিটি উনার পরিবারের রাজপ্রাসাদের প্রধান গেইটের ছবি। এই প্রাসাদটি নিয়ে লিখতে বসলে আর একটা ব্লগ পোস্ট লিখতে হবে। এটি নির্মান করা হয় ২০০ বছর আগে। বাইরে যে স্বর্ন রঙ দেখতে পাচ্ছে সেগুলো আসলেই স্বর্ন এবং নিল রঙের পাথর গুলো সম্পর্কে আমার থেকে আপনাদেরই ভালো আইডিয়া আছে।
০৬) Hamad bin Khalifa al Thani

০৬) Hamad bin Khalifa al Thani

মধ্যপ্রাচ্যের সেরা বদমাইসদের একজন এই ভদ্রলোক। উনি ২০০৮ এর দিকে ফিলিস্তিনে হামাস নেতাদের কে কলম সহ বেশ কিছু জিনিশ পত্তর গিফট করেছিলেন। সেই কলমগুলো সেন্সর করা ছিল ইসরাইলি স্যাটালাইটের সাথে। পরে সেইগুলো মার্ক করে ইসরাইল ২০০৯ এ ফিলিস্তিনে হামাস এর অফিসগুলোতে ব্যাপক বোমা বর্ষন করে। উনি থানি রাজবংশের সর্বশেষ সাজা হিসাবে কাতার শাষন করেছেন। বর্তমানে উনার সুপুত্র তামিম রাজা হিসাবে আছেন। তিনি ১৯৯৫ সালে এক রকম জোর করে উনার বাপের কাছথেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেন। গত বছর ঠিক একই কায়দায় উনার গুনধর পুত্র উনার কোমরে লাথ্থি দিয়া ক্ষমতাটা ছিনাইয়া নেন। উনার টোটাল সম্পদের পমিান বর্তমানে ৭ বিলিয়ন ডলারের উপরে। তবে সেটা তেল বেইজড না। ইংল্যান্ডের রাজধানি লন্ডনের শার্ড টাওয়ার, বার্কলাইস ব্যাংক, হিথ্রো এয়ার পোর্ট, Harrods গ্রুপ অফ কোম্পানি, ফ্রান্সের ফুটবল ক্লাব Paris Saint-Germain F.C, জার্মানির গাড়ি কোম্পানি ভক্সওয়াগন, বিশ্বখ্যাত ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি সিমেন্স এবং নেদারল্যান্ডের সরকারি তেলের কোম্পনি Royal Dutch Shell এ উনার বিশাল সব ইনভেস্ট মেন্ট আছে। আর একটু ডিপলি ঘাটলে এই সব কোম্পানির ইনভেস্টরদের মধ্যে ইসরাইলি মালিকানাও পাবেন। উনার আসল সম্পদের পরিমান অজানা। কারন এই কোম্পানিগুলার টোটাল স্টেটমেন্ট হিসাবে করলে টাকা পরিমান ২৫ থেকে ৩০ বিলিয়ন ছারিয়ে যাবে। তবে সেটা এখন বর্তমান আমির এর মালিকানায় চলে গেছে বলেই মনে হচ্ছে।

লন্ডনের শার্ড টাওয়ার। ধারনা করা হয় এইটার বেশিভাগ ইনভেস্টমেন্টই উনার করা।

উপরের ইয়ট টা উনার ব্যাক্তিগত একটা জাহাজ। ভতিরে কি আছে এক আল্লাহ তায়ালা জানেন। এটার দাম পরছে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মত। ২০১০ সালে এইটা ডেলিভারি দেয় নির্মানকারি প্রতিষ্ঠান। নিচের ভিডিওটায় ওনার এই ইয়টটা সম্পর্কে হালকা ধারনা পাবেন।
Comments
Post a Comment